ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ গুলো কি কি জানুন
প্রস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি (Benign Prostatic Hyperplasia): পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে এটি মূত্রনালিকে চেপে ধরে, ফলে মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি হতে পারে না বা প্রস্রাব আটকে যায়। এই সমস্যা সাধারণত বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
মূত্রনালিতে বাধা: মূত্রনালি সংকুচিত হয়ে গেলে বা এতে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে, যেমন পাথর বা টিউমার, প্রস্রাব আটকে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।
স্নায়বিক সমস্যা: যদি মস্তিষ্ক, মূত্রাশয় বা মূত্রনালির স্নায়ু ঠিকভাবে কাজ না করে (যেমন: স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি, ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু দুর্বলতা, মস্তিষ্কে স্ট্রোক ইত্যাদি), তাহলে মূত্রাশয় সঙ্কুচিত হয়ে প্রস্রাব বের করতে পারে না।
মূত্রাশয়ের পেশি দুর্বলতা: মূত্রাশয়ের পেশি দুর্বল হয়ে গেলে তা সঠিকভাবে সংকুচিত হয়ে প্রস্রাব বের করতে পারে না। এটি সাধারণত বয়স বৃদ্ধির সাথে বা দীর্ঘমেয়াদী কিছু রোগের কারণে হতে পারে।
প্রসবের পর: মহিলাদের ক্ষেত্রে ডেলিভারির পর কিছু সময়ের জন্য প্রস্রাব আটকে থাকার প্রবণতা থাকতে পারে, যা সাধারণত সাময়িক।
মূত্রনালি বা মূত্রাশয়ে আঘাত: আঘাত বা অস্ত্রোপচারের ফলে মূত্রনালি বা মূত্রাশয়ে ক্ষতি হলে, সেখানেও প্রস্রাব আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
মেডিকেশন সাইড এফেক্ট: কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, এবং পেইন কিলার, মূত্রাশয় সংকুচিত হওয়া বা মূত্রনালি সংকুচিত করার মাধ্যমে প্রস্রাব আটকে রাখতে পারে।
প্রস্রাব সম্পূর্ণরূপে ক্লিয়ার বা খালি করতে কিছু কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে, যা মূত্রাশয়ে প্রস্রাব আটকে যাওয়া বা পুরোপুরি খালি না হওয়ার সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। নিম্নলিখিত কিছু উপায়।
১. দ্রুত প্রস্রাব না করা:
প্রস্রাব করার সময় ধীরে ধীরে এবং সম্পূর্ণরূপে প্রস্রাব করার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো না করে প্রস্রাবের শেষ অংশটুকুও বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
২. দ্বিগুণ ভয়েডিং (Double Voiding)
প্রস্রাব করার পরে মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি না হলে কিছুক্ষণ বসে থেকে আবার চেষ্টা করুন। একবার প্রস্রাব করার পর পুনরায় একটু বিশ্রাম নিন এবং আবার প্রস্রাবের চাপ অনুভব হলে দ্বিতীয়বার প্রস্রাব করার চেষ্টা করুন।
৩. কেগেল এক্সারসাইজ (Kegel Exercise)
কেগেল ব্যায়াম মূত্রাশয়ের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে পারে এবং প্রস্রাবের প্রবাহে সহায়তা করে। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে মূত্রাশয় এবং পেলভিক পেশির শক্তি বাড়ে, যা মূত্র প্রবাহে সহায়ক।
৪. আঙুলের চাপ (Bladder Stimulation)
নাভির নিচে মৃদু চাপ প্রয়োগ করে মূত্রাশয় সংকুচিত করতে সাহায্য করতে পারেন, যা প্রস্রাবের প্রবাহ বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
৫. বেশি পানি পান করা:
৬. সঠিক বসার পদ্ধতি (Proper Positioning):
প্রস্রাব করার সময় মূত্রাশয়কে সম্পূর্ণ খালি করতে বসার সঠিক ভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ। পায়ের মাঝখানে একটু দূরত্ব রেখে বসা এবং মেরুদণ্ড সোজা রাখা সহায়ক হতে পারে।
৭. গরম পানির ব্যবহার:
কিছু সময়ে গরম পানির প্রভাবে মূত্রাশয়ের পেশিগুলি শিথিল হয় এবং প্রস্রাব সহজে হতে পারে।
যদি এই উপায়গুলো কার্যকর না হয় এবং নিয়মিত প্রস্রাব আটকে যাওয়ার বা খালি না হওয়ার সমস্যা থাকে, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।