নিদ্রাহীন থাকলে শরীরের যেসব ক্ষতি হতে পারে

শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হলো, বয়সভেদে বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষই নিদ্রাহীনতা বা ইনসমনিয়া সমস্যায় ভুগছেন। নিদ্রাহীনতা (Sleep Deprivation) শরীর ও মনের ওপর বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যদি নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে শরীরে যেসব ক্ষতি হতে পারে সেগুলো হলো—


১. মস্তিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি:

স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয় – মস্তিষ্ক তথ্য সংরক্ষণ ও মনে রাখার ক্ষমতা হারাতে পারে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় – হতাশা, উদ্বেগ ও খারাপ মেজাজ বাড়তে পারে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায় – চিন্তাভাবনায় ধীরগতি আসে ও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

২. দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়:

শরীর সহজেই ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি নিদ্রাহীনতা হলে সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়।




৩. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি:

দীর্ঘদিন ঘুমের অভাব থাকলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে। হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

৪. ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি:

ঘুমের অভাবে লেপটিন ও গ্রেলিন (ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন) ভারসাম্য হারায়, ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়।অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে এবং ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

৫. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি:

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে।

৬. যৌনক্ষমতা হ্রাস:

দীর্ঘদিন ঘুম না হলে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, ফলে যৌন আকাঙ্ক্ষা ও কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।

৭. গায়ের ক্লান্তি ও দুর্বলতা:

সারাদিন শরীর দুর্বল লাগে, মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, এবং কাজ করার এনার্জি কমে যায়।

৮. ত্বকের ক্ষতি ও বয়সের ছাপ:

ঘুম কম হলে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়, চোখের নিচে কালি পড়ে এবং ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যেতে পারে।

উপসংহার:

প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নেওয়া শরীরের জন্য অপরিহার্য। যদি আপনি নিয়মিত অনিদ্রায় ভুগে থাকেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।