মেয়েদের স্তন ক্যান্সার কেন হয়?

মেয়েদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার কারণগুলি বিভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু প্রধান কারণ হলো:

জিনগত কারণ: 

কিছু ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সার বংশগত হতে পারে। BRCA1 ও BRCA2 জিনের মিউটেশন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

বয়স: 

বয়স বাড়ার সাথে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি থাকে।

হরমোনাল কারণ: 

দীর্ঘ সময় ধরে ইস্ট্রোজেনের সাথে সংস্পর্শে থাকা, যেমন দেরিতে মেনোপজ হওয়া বা কম বয়সে পিরিয়ড শুরু হওয়া, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা: 

ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, ব্যায়ামহীনতা এবং অতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

পূর্বের ক্যান্সার বা বিকিরণ চিকিৎসা: 

যদি আগে স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে বা বুকে কোনো বিকিরণ চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তাহলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি: 

মেনোপজের পর হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি গ্রহণ করলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

স্তন ক্যান্সার এড়াতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, যা ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। যদিও পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, নিম্নলিখিত অভ্যাসগুলো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে:

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: 

প্রচুর ফল, সবজি, এবং ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। অস্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।

নিয়মিত ব্যায়াম: 

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: 

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষত মেনোপজের পরে। তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যালকোহল পরিহার বা সীমিত করা: 

অ্যালকোহল সেবনের মাত্রা কমালে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। প্রতিদিন অ্যালকোহল পান না করাই উত্তম।

ধূমপান পরিহার করা: ধূমপান ক্যান্সারের বিভিন্ন প্রকারের জন্য একটি বড় কারণ। তাই ধূমপান ছেড়ে দেয়া উচিত।

বাচ্চা নেওয়ার বয়স: 

৩০ বছরের আগে প্রথম সন্তান নেওয়া স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে পারে। স্তন্যদানও এই ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক।

হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (HRT) এড়ানো: 

দীর্ঘ সময় ধরে হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি নেওয়া ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হরমোন থেরাপি গ্রহণ করা উচিত।

নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ: 

মেমোগ্রাম এবং অন্যান্য নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করা ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করতে সাহায্য করে। বিশেষত যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের নিয়মিত চেক-আপ করানো উচিত।

জিনগত পরামর্শ: 

যদি আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের স্তন ক্যান্সার থেকে থাকে, তবে জেনেটিক টেস্টিং ও পরামর্শ গ্রহণ করা উপকারী হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, ঝুঁকি কমানোর জন্য প্রতিরোধমূলক সার্জারি করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।

এগুলো অনুসরণ করে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব, তবে নিয়মিত পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।