ব্যায়াম করার সঠিক সময়
ব্যায়ামের উপযুক্ত সময় নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, সময়সূচি, এবং ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর। সাধারণত দুটি সময় বেশি জনপ্রিয়:
সকাল:
শরীর সতেজ থাকে: সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীর সতেজ থাকে, ফলে ব্যায়ামে বেশি শক্তি পাওয়া যায়।
দীর্ঘমেয়াদি অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ: সকালে ব্যায়াম করলে সারা দিনের জন্য মন ভালো থাকে এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ হয়।
হরমোনের প্রভাব: সকালে কর্টিসল এবং টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেশি থাকে, যা ব্যায়ামের প্রভাব বাড়াতে সহায়ক।
সন্ধ্যা বা বিকেল:
শক্তি বেশি থাকে: দিনের কাজ শেষ করে শরীরে বেশি শক্তি এবং তাপমাত্রা থাকে, যা সন্ধ্যায় ব্যায়ামের জন্য সহায়ক।পেশির নমনীয়তা: বিকেলের দিকে পেশির নমনীয়তা বেশি থাকে, ফলে ব্যায়ামের সময় আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
পরামর্শ: আপনার শরীরের সাথে কোন সময় বেশি খাপ খায় তা খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ। সকালে ব্যায়াম করা যদি আপনার পক্ষে কঠিন হয়, তাহলে বিকেলে বা সন্ধ্যায় করতে পারেন। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন।ব্যায়ামের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস থাকা জরুরী।
অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হলো:
১. পেশি ও জয়েন্টের আঘাত
অতিরিক্ত ব্যায়াম পেশি এবং জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা পেশির টান, আঘাত, বা প্রদাহ ঘটাতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে আর্থ্রাইটিস বা বয়সজনিত জয়েন্ট সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
২. হাড়ের দুর্বলতা
অনবরত ব্যায়াম করতে থাকলে হাড়ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা হাড় দুর্বল বা ভঙ্গুর করে তুলতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত ব্যায়ামে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা, যেমন স্ট্রেস ফ্র্যাকচার, হতে পারে।
৩. হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা পরিবর্তিত হয়, যা বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্রে প্রভাব ফেলে। পুরুষদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে পারে, যা শারীরিক কর্মক্ষমতা ও মনোবল কমিয়ে দেয়।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
শরীরের অতিরিক্ত ব্যায়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এটি শরীরকে দুর্বল করে তোলে এবং সংক্রমণ ও ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. ক্লান্তি ও মানসিক চাপ
প্রতিদিন অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীর ও মন পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, ফলে ক্লান্তি, বিষণ্নতা, ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ওভারট্রেনিং সিনড্রোম নামে পরিচিত, যা উদ্বেগ এবং হতাশা বাড়াতে পারে।
৬. হৃৎপিণ্ডের সমস্যা
অতিরিক্ত উচ্চ-কার্ডিও ব্যায়াম দীর্ঘ সময় ধরে করলে হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা পরবর্তীতে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা দুর্বল করে দিতে পারে এবং কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া বা হার্টের অনিয়মিত স্পন্দনের ঝুঁকি বাড়ায়।
করণীয়
মধ্যম পর্যায়ে ব্যায়াম এবং যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া শরীরের জন্য উপকারী। বিশ্রাম ও ব্যায়ামের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখলে শরীরের সুস্থতা রক্ষা হয় এবং ক্ষতির ঝুঁকি কমে।
Tags:
যোগব্যায়াম