ডায়াবেটিস কেন হয় এবং করণীয় কি
ডায়াবেটিস কেন হয়:
ডায়াবেটিস হলো একটি দীর্ঘমেয়াদী (ক্রনিক) রোগ যেখানে শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এটি সাধারণত দুটি প্রধান কারণে হতে পারে:
১/ ইনসুলিনের অভাব: শরীরের অগ্ন্যাশয় যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। ইনসুলিন হলো একটি হরমোন যা রক্তে গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করতে সাহায্য করে, ফলে কোষগুলো সেই গ্লুকোজকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
২/ ইনসুলিন প্রতিরোধ: কখনও কখনও শরীর ইনসুলিন তৈরি করে, কিন্তু কোষগুলো সেই ইনসুলিনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। একে ইনসুলিন প্রতিরোধ বলা হয়।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ:
৩/ টাইপ ১ ডায়াবেটিস: ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়, ফলে শরীর প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এটি সাধারণত শিশু এবং যুবকদের মধ্যে দেখা যায়।
৪/ টাইপ ২ ডায়াবেটিস: শরীর ইনসুলিন তৈরি করে, তবে এটি সঠিকভাবে কাজ করে না বা পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায় এবং জীবনযাত্রা, ওজন বৃদ্ধি এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে এটি হতে পারে।
৫/ গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: গর্ভাবস্থার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি ঘটে। যদিও এটি সাধারণত জন্মের পরে চলে যায়, তবে পরবর্তীতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
করণীয় স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:
বেশি শাক-সবজিফলমূল, এবং পূর্ণ শস্য খাবার খান। কম চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত খাবার গ্রহণ করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করুন। হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা ভালো উপায় হতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে।
ওষুধ এবং ইনসুলিন:
প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শে ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করুন।
রক্তে শর্করার নিয়মিত পরীক্ষা:
নিয়মিতভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত যাতে এটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।
স্ট্রেস ব্যবস্থাপনা:
স্ট্রেস কমাতে ধ্যান, যোগব্যায়াম বা মনোযোগ বৃদ্ধি করার কৌশল অনুসরণ করুন। স্ট্রেস হরমোন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
ধূমপান এবং মদ্যপান এড়ানো:
ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় এবং অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিসকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে, এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব যেমন হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, এবং স্নায়ুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
Nice post
উত্তরমুছুন